বৃষ্টির দিনে যে ৫টি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ – জানুন বিস্তারিত
ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ আমাদেরই বাংলাদেশ। ৬ ঋতুর দেশ হলেও এদেশে বর্ষা ছাড়াও প্রায় সব ঋতুতেই কম বেশি বৃষ্টি হয়। গ্রীষ্মের প্রখর গরমে যখন মাঠ-ঘাট খাল বিল ফেটে চৌচির ঠিক তখনই ধরণীর বুকে নেমে আসে কালবৈশাখী ঝড়। আবার শীতের হিমেল হাওয়ায় যখন গাঁ কাপে, সেই মৌসুমেও কখনো কখনো হটাত বৃষ্টি যেন শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। আর বর্ষা মৌসুমে সারাদিন মুষল ধারে বৃষ্টি প্রকৃতিকে যেন গাঁড় সবুজ রঙে রাঙ্গিয়ে দেয়। কিন্তু জানালার পাশে বসে বৃষ্টি উপভোগ করতে বেশ ভাল লাগলেও, বৃষ্টির দিনে বাহিরে কোন গন্তব্যে যাবার উদ্দেশ্যে বের হওয়া সত্যিই বেশ কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কারন একটু খামখেয়ালী বা অসতর্কতাই আপনার জীবনের জন্য কাল হতে পারে। তাই চলুন জেনে নেই বৃষ্টি দিনে বা বর্ষা মৌসুমে যেসকল সতর্কতা পালন করা আবশ্যক ঃ
১. গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়াঃ বর্ষা বা ঝড় – বৃষ্টির মৌসুমে হটাত করেই যেন চারদিক কাল মেঘে ঢেকে যায়। এরপর আকাশ বাতাস কাপিয়ে চারদিক থেকে যেন হুঙ্কার দিয়ে বয়ে আসে দানবের মত ঝড়ো বাতাস। শুরু হয় ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি। উপায় না পেয়ে অনেকেই তখন তড়িঘড়ি করে গাছের তলে আশ্রয় নেই। আর যার পরিণাম হয় বজ্রপাতে অকাল মৃত্যু! বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা আজ প্রায়ই পত্র-পত্রিকার শিরোনামের প্রধান খবর। কারন অনেকের কাছেই অজানা, বজ্রপাত সাধারনত খোলা মাঠ, লম্বা বা উঁচু গাছ, উঁচু দালানের ছাদ ইত্যাদির উপর বেশি পতিত হয়। তাই ঝড়-বৃষ্টির সময় ঘরে ভিতর বা বাইরে কোথাও অবস্থানরত অবস্থায় থাকলে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মার্কেট ইত্যাদির ভিতর আশ্রয় নিন।
২. পথ চলতে সাবধানতা অবলম্বনঃ বর্ষা বা ঝড় – বৃষ্টির মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের রাস্তাগুলো পানির তলে হারিয়ে যায়। সাধারনত ড্রেইনগুলোতে ময়লা জমে থাকার কারনে পানি নিষ্কাশনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। আর তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই ডুবে থাকা পথ দিয়েই হাটতে বাধ্য হয়। কিন্তু অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে পথ-ঘাট ডুবে যাওয়ায় কোথাও কোন গভীর গর্ত বা ম্যানহলের ঢাকনা খোলা অবস্থায় থাকলেও অনেকসময় তা বুঝার কোন উপায় থাকে না। আর যার পরিণতি – পানিতে ডুবে অকাল মৃত্যু! তাছাড়া অনেকসময় ঝড় বৃষ্টির কারনে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বৈদ্যুতিক তার পানিতে পরে থাকতে দেখা যায়। আর এমতবস্থায় ওই বৈদ্যুতিক তার হতে বিদ্যুৎ প্রবাহ হলে পানিতে পা দেওয়া মাত্রই মৃত্যু সুনিশ্তিত। তাই ঝড় – বৃষ্টির মৌসুমে কোন পথে পানি জমে থাকতে দেখলে সেই পথ এড়িয়ে চলাটাই শ্রেয়।
বৃষ্টির দিনে যে ৫টি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ
৩. দোকানের সামনে আশ্রয় না নেওয়াঃ শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল প্রায়ই প্রতিটি দোকানের সামনেই রোদ কিংবা বৃষ্টি থেকে ক্রেতাদের সুরক্ষা করার জন্য টিনের চালের তৈরি ছাউনি বেশ লক্ষণীয়। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে ক্রেতাদের সুরক্ষা করার জন্য এই ছাউনিই যেন কখনো কখনো কাল হয়ে দাড়ায়। কারন প্রবল বাতাসে অনেকসময় দোকানের ছাউনির ব্যবহৃত টিন, সাইনবোর্ড ইত্যাদি উরে এসে পরে। আর একটু মাত্র অসতর্কতায় হতে পারে জীবনের জন্য ঝুঁকি। তাই ঝড়-বৃষ্টির সময় দোকানের ছাউনির নিচে আশ্রয় না নেওয়াটাই উত্তম।
৪. চামড়ার জুতা পরিধান না করাঃ বর্ষা কিংবা বৃষ্টির মৌসুমে কখন যে আকাশ কাল হয়ে অঝোরে বৃষ্টি নামে তা বলা মুশকিল। এইতো সেদিন আমি সদ্য ক্রয় করা নতুন চামড়ার জুতাটি পরে অফিসে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা হই। আকাশে সেদিন কোথাও কোন মেঘের ছিটে ফোঁটা নেই দেখে খুব উৎফুল্ল মনেই পথ চলছিলাম। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অফিস থেকে ফেরার পথে! রিকশা থেকে নামতেই শুরু হয় বৃষ্টি। কাছেই ট্রেন ষ্টেশন। ছাতা মাথায় দিয়ে দৌড় দিয়ে সেখানে পৌছাতে পৌছাতেই সদ্য কিনা নতুন চকচকে চামড়ার জুতা গেল ভিজে। চামড়ার জুতা ভিজে গেলে না শুকালে গুনমান নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাড়ি পৌঁছেই চুলার কাছে রেখে অনেক কষ্টে শুঁকাতে হয়েছিল। এরপর থেকে বর্ষা মৌসুমে চামড়ার জুতা পরা থেকে বিরত থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তবে আপনি চাইলে বর্ষা মৌসুমে Flip flops, Rubber-Soled Sandals, Waterproof Boots বা Gumboot ব্যবহার করতে পারেন। এসকল জুতা বৃষ্টিতে ভিজলেও গুনমান নষ্ট হয় না। অনলাইনে সেরা মানের Gumboot গুলো অর্ডার করতে বা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
৫. সাথে ছাতা বা রেইনকোট না নিয়ে বের হওয়াঃ বর্ষা মৌসুমে হঠাৎ করেই ঘন কাল মেঘ থেকে বৃষ্টি নেমে আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই তড়িঘড়ি বা খামখেয়ালী করে ছাতা বা রেইনকোট না নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পরেন। আর যার কারনে বৃষ্টিতে ভিজেই পথ চলা বা কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। তাই অবশ্যই বর্ষা বা বৃষ্টি মৌসুমে সাথে ছাতা বা রেইনকোট রাখুন।
যদিও বৃষ্টির দিনে বাজারে গিয়ে ছাতা কেনাটাও কষ্টসাধ্য কাজ। চিন্তিত হবেন না! কারন আপনি ঘরে বসেই আপনার পছন্দের সেরা মানের ছাতা বা রেইনকোট সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রয় করতে পারেন fixit.com.bd থেকে। তাই অনলাইনে অর্ডার করতে বা কালেকশনগুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
পরিশেষে, বৃষ্টির মৌসুম আনন্দের, বৃষ্টির মৌসুম গরম খিচুড়ি খাওয়ার উৎসব। তবে অসাবধানতার কারনে এই আনন্দ যেন দুঃখ বা কষ্টের কারন না হয় সেইদিকে আমাদের সবারই লক্ষ্য রাখা উচিৎ।
ধন্যবাদ।
Written by: Aminul Islam Ovi